Add more content here...
Dhaka ০৮:৩৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনামঃ
নিজের শখ মেটাতে হেলিকপ্টারে চড়ে বাড়ি ফিরলেন জার্মান প্রবাসী ফয়সাল  সোর্স দিয়ে মাদক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করে এএসআই খালেক পাবনার আটগড়িয়ায় আন্তঃনগর বুড়িমারী এক্সপ্রেস ট্রেন লাইনচ্যুত হয় কালুখালী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিজয়ী হলেন যারা মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাত হলেপ্রভাব পড়বে বাংলাদেশে – প্রধানমন্ত্রী টাঙ্গাইল জেলার মধুপুর ও ধনবাড়ি উপজেলা পরিষদ নির্বাচন উপলক্ষে ভোট কেন্দ্র সমূহ পরিদর্শন করেন পুলিশ সুপার পলাশবাড়ী উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী তৌহিদুল আমিন মন্ডল সুমন যুবদল থেকে বহিস্কার প্রতিজ্ঞা করেছিলাম ফিরে আসবোই – শেখ হাসিনা বেহাল দশা সুন্দাদিল মাদ্রাসা এবং কাজীপাড়ার কাঁচা রাস্তাটির জেলার কালীগঞ্জ উপজেলায় জমি বিক্রয়ের টাকা গ্রহণ করার পরেও রেজিস্ট্রি না দেওয়ার অভিযোগ
নোটিশঃ
প্রিয়" পাঠকগণ", "শুভাকাঙ্ক্ষী" ও প্রতিনিধিদের উদ্দেশ্যে জানানো যাচ্ছে:- কিছুদিন যাবত কিছু প্রতারক চক্র দৈনিক ক্রাইম তালাশ এর নাম ব্যবহার করে প্রতিনিধি নিয়োগ ও বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। তার সাথে একটি সক্রিয় চক্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন গ্রুপ বিভিন্ন ভাবে "দৈনিক ক্রাইম তালাশ"কে হেয় প্রতিপন্ন করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। মনে রাখবেন "দৈনিক ক্রাইম তালাশ" এর অফিসিয়াল পেজ বা নিম্নের দুটি নাম্বার ব্যাতিত কোন রকম লেনদেনে জড়াবেন না। মোবাইল: 01867329107 হটলাইন: 01935355252

তামাক চাষের প্রতি আগ্রহ দেখাতে গিয়ে জমির উর্বরতা নষ্ট করছে কৃষক

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৯:৩৬:৩০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৪
  • ১৬৩ Time View

মো: সাদেকুল ইসলাম,লালমনিরহাট প্রতিনিধি: উত্তরাঞ্চলের সীমান্তবর্তী জেলা লালমনিরহাট শস্য ভান্ডারের খ্যাতি অর্জনকারী একটি জেলা। এ জেলায় কৃষি চাষের জন্য জমিগুলো এখন তামাক চাষের দখলে চলে গেছে। ফলে দিন দিন পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা বাড়ছে। গত তিন দশকে পরিবেশ বিধ্বংসী তামাক জেলার ৮০ শতাংশ কৃষি জমি গ্রাস করেছে। এখনো কৃষকদের মাঝে বেড়েই চলেছে তামাক চাষের প্রবণতা।

অনুসন্ধান চালিয়ে জানা গেছে, তামাক শুকানোর জন্য জেলার তামাক ক্ষেত ও বসতভিটার পাশে তৈরি করা হচ্ছে তামাক চুল্লি। এ কারণে এলাকায় জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের গাছ। এ কারণে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে বনায়ন প্রকল্প। স্থানীয় প্রান্তিক কৃষকদের ভাস্যমতে তামাক চাষের কারণে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কৃষি জমির বর্গামূল বেড়েছে কয়েকগুণ। যে জমি গত কয়েক বছর পূর্বে বর্গা হতো ৪/৫ হাজার টাকায় সে জমি এখন বর্গা হচ্ছে ১০-১৫ হাজার টাকা। বর্গামূল্য বৃদ্ধির কারণেই সাধারণ কৃষকরা তামাক চাষে ঝুঁকে পড়েছে।

লালমনিরহাট কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে ৯৮ হাজার ৭৭৫ হেক্টর জমি আবাদি রয়েছে। এর মধ্যে ৯ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে তামাক আবাদ করা হয়েছে। অন্যান্য বারের চেয়ে এবার আলু আবাদ তুলনামূলকভাবে অনেক কমেছে। ৪ হাজার ৪৫ হেক্টর জমিতে আলু চাষাবাদ করা হয়েছে বলে জেলা কৃষি বিভাগ নিশ্চিত করেছে। আর যেসব জমিতে আলুর আবাদ হয়নি সেসব জমিতে এবার তামাক চাষ হয়েছে।

লালমনিরহাট মসলা গবেষণা উপকেন্দ্রের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. মোস্তাক আহমেদ জানান, মসলা জাতীয় ফসল শাক-সবজি বাহারি ফুল চাষের জন্য এ জেলার মাটি অত্যন্ত উপযোগী। তাই তামাকের বদলে মসলা জাতীয় ফসল চাষ করলে এখানকার কৃষকরা তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটাতে পারে। আর এ জন্য কৃষকদের মাঝে সচেতেনতা বাড়ানো বিশেষ প্রয়োজন। যদি কৃষকদের মাঝে এ ব্যাপারে ব্যাপক সচেতনতা সৃষ্টি করা যায় তাহলে কৃষকরা তামাকের বদলে এসব ফসল চাষ করবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন। এ ব্যাপারে তিনি সরকারি বেসরকারি সংস্থাগুলোকে এগিয়ে আসার জন্য আহ্বান জানান।পলাশী ইউনিয়নের রুস্তম আলী জানান অন্যান্য আবাদের চেয়ে তামাক মূল্য বেশি হওয়ায় তাই কিছু কৃষক তামাক চাষের প্রতি আগ্রহ দেখাচ্ছে।

উপজেলার মহেন্দ্রনগর ইউনিয়নের ঢঢোগাছ গ্রামের কৃষক আমজাদ হোসেন বলেন, রবিশস্য আবাদ করার পর তা বাজারজাতকরণে রয়েছে নানা সমস্যা। অপরদিকে তামাক চাষে পুঁজিবাদী তামাক কম্পানিগুলো কৃষকদের আগাম টাকা ঋণ ও নানা ধরনের উপকরণের সুযোগ-সুবিধা প্রদান করে আসছে। যেটা আমরা রবিশস্য চাষ ও বাজারজাতকরণে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর নিকট আমরা সহজে কোনো কিছুই পাই না।দৈনিক ক্রাইম তলাশের জেলা প্রতিনিধি সাদেকুল ইসলামের সাথে একান্ত আলাপ কালে কৃষকরা তাদের মতামত ব্যক্ত করেন।

কৃষক মজিদুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, কৃষি উপকরণের মূল্য অনুযায়ী ইরি-বোরো ধান ও রবিশস্য চাষ আমাদের জন্য অধিক খরচ। একই অভিযোগ করেন সাপ্টিবাড়ি এলাকার রাশেদ আলী ও আবুল কাশেম। তাঁরা বিভিন্ন তামাক কম্পানিগুলোর লোভনীয় অফার নিয়ে তামাক চাষে ঝুঁকে পড়েছে। পুঁজিবাদী বিভিন্ন কম্পানি এ অঞ্চলের কৃষকদের আগাম টাকা, সার, বীজসহ নানা সুযোগ-সুবিধা দেওয়ায় কৃষকরা রবিশস্যের পরিবর্তে এখন তামাক চাষ করছে।

লালমনিরহাট কৃষি অধিদপ্তরের জেলা কর্মকর্তা বিধূ ভূষণ রায় জানান, শুধুমাত্র জনসচেতেনতার অভাবেই জেলার সাধারণ কৃষকরা তামাক চাষে আগ্রহী হচ্ছে। এ ছাড়া তামাক কোম্পানিগুলো কৃষকদের আগাম টাকা ঋণ ও নানা ধরনের উপকরণের লোভনীয় সুযোগ-সুবিধা প্রদান করার জন্য চাষিরা তাদের ফাঁদে পা দিচ্ছে। কিন্তু এতে করে পরিবেশ ও জমির কি পরিমাণ ক্ষতি হচ্ছে সেটা বুঝতে পারছে না তারা। তবে কৃষকরা যেন তামাকের বদলে অধিক মুনাফার ফসল ভুট্টা আবাদের দিকে ঝুকে সেজন্য সরকারিভাবে আমরা চেষ্টা করছি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Popular Post

বাংলাদেশি it কোম্পানি

নিজের শখ মেটাতে হেলিকপ্টারে চড়ে বাড়ি ফিরলেন জার্মান প্রবাসী ফয়সাল 

x

তামাক চাষের প্রতি আগ্রহ দেখাতে গিয়ে জমির উর্বরতা নষ্ট করছে কৃষক

Update Time : ০৯:৩৬:৩০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৪

মো: সাদেকুল ইসলাম,লালমনিরহাট প্রতিনিধি: উত্তরাঞ্চলের সীমান্তবর্তী জেলা লালমনিরহাট শস্য ভান্ডারের খ্যাতি অর্জনকারী একটি জেলা। এ জেলায় কৃষি চাষের জন্য জমিগুলো এখন তামাক চাষের দখলে চলে গেছে। ফলে দিন দিন পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা বাড়ছে। গত তিন দশকে পরিবেশ বিধ্বংসী তামাক জেলার ৮০ শতাংশ কৃষি জমি গ্রাস করেছে। এখনো কৃষকদের মাঝে বেড়েই চলেছে তামাক চাষের প্রবণতা।

অনুসন্ধান চালিয়ে জানা গেছে, তামাক শুকানোর জন্য জেলার তামাক ক্ষেত ও বসতভিটার পাশে তৈরি করা হচ্ছে তামাক চুল্লি। এ কারণে এলাকায় জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের গাছ। এ কারণে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে বনায়ন প্রকল্প। স্থানীয় প্রান্তিক কৃষকদের ভাস্যমতে তামাক চাষের কারণে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কৃষি জমির বর্গামূল বেড়েছে কয়েকগুণ। যে জমি গত কয়েক বছর পূর্বে বর্গা হতো ৪/৫ হাজার টাকায় সে জমি এখন বর্গা হচ্ছে ১০-১৫ হাজার টাকা। বর্গামূল্য বৃদ্ধির কারণেই সাধারণ কৃষকরা তামাক চাষে ঝুঁকে পড়েছে।

লালমনিরহাট কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে ৯৮ হাজার ৭৭৫ হেক্টর জমি আবাদি রয়েছে। এর মধ্যে ৯ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে তামাক আবাদ করা হয়েছে। অন্যান্য বারের চেয়ে এবার আলু আবাদ তুলনামূলকভাবে অনেক কমেছে। ৪ হাজার ৪৫ হেক্টর জমিতে আলু চাষাবাদ করা হয়েছে বলে জেলা কৃষি বিভাগ নিশ্চিত করেছে। আর যেসব জমিতে আলুর আবাদ হয়নি সেসব জমিতে এবার তামাক চাষ হয়েছে।

লালমনিরহাট মসলা গবেষণা উপকেন্দ্রের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. মোস্তাক আহমেদ জানান, মসলা জাতীয় ফসল শাক-সবজি বাহারি ফুল চাষের জন্য এ জেলার মাটি অত্যন্ত উপযোগী। তাই তামাকের বদলে মসলা জাতীয় ফসল চাষ করলে এখানকার কৃষকরা তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটাতে পারে। আর এ জন্য কৃষকদের মাঝে সচেতেনতা বাড়ানো বিশেষ প্রয়োজন। যদি কৃষকদের মাঝে এ ব্যাপারে ব্যাপক সচেতনতা সৃষ্টি করা যায় তাহলে কৃষকরা তামাকের বদলে এসব ফসল চাষ করবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন। এ ব্যাপারে তিনি সরকারি বেসরকারি সংস্থাগুলোকে এগিয়ে আসার জন্য আহ্বান জানান।পলাশী ইউনিয়নের রুস্তম আলী জানান অন্যান্য আবাদের চেয়ে তামাক মূল্য বেশি হওয়ায় তাই কিছু কৃষক তামাক চাষের প্রতি আগ্রহ দেখাচ্ছে।

উপজেলার মহেন্দ্রনগর ইউনিয়নের ঢঢোগাছ গ্রামের কৃষক আমজাদ হোসেন বলেন, রবিশস্য আবাদ করার পর তা বাজারজাতকরণে রয়েছে নানা সমস্যা। অপরদিকে তামাক চাষে পুঁজিবাদী তামাক কম্পানিগুলো কৃষকদের আগাম টাকা ঋণ ও নানা ধরনের উপকরণের সুযোগ-সুবিধা প্রদান করে আসছে। যেটা আমরা রবিশস্য চাষ ও বাজারজাতকরণে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর নিকট আমরা সহজে কোনো কিছুই পাই না।দৈনিক ক্রাইম তলাশের জেলা প্রতিনিধি সাদেকুল ইসলামের সাথে একান্ত আলাপ কালে কৃষকরা তাদের মতামত ব্যক্ত করেন।

কৃষক মজিদুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, কৃষি উপকরণের মূল্য অনুযায়ী ইরি-বোরো ধান ও রবিশস্য চাষ আমাদের জন্য অধিক খরচ। একই অভিযোগ করেন সাপ্টিবাড়ি এলাকার রাশেদ আলী ও আবুল কাশেম। তাঁরা বিভিন্ন তামাক কম্পানিগুলোর লোভনীয় অফার নিয়ে তামাক চাষে ঝুঁকে পড়েছে। পুঁজিবাদী বিভিন্ন কম্পানি এ অঞ্চলের কৃষকদের আগাম টাকা, সার, বীজসহ নানা সুযোগ-সুবিধা দেওয়ায় কৃষকরা রবিশস্যের পরিবর্তে এখন তামাক চাষ করছে।

লালমনিরহাট কৃষি অধিদপ্তরের জেলা কর্মকর্তা বিধূ ভূষণ রায় জানান, শুধুমাত্র জনসচেতেনতার অভাবেই জেলার সাধারণ কৃষকরা তামাক চাষে আগ্রহী হচ্ছে। এ ছাড়া তামাক কোম্পানিগুলো কৃষকদের আগাম টাকা ঋণ ও নানা ধরনের উপকরণের লোভনীয় সুযোগ-সুবিধা প্রদান করার জন্য চাষিরা তাদের ফাঁদে পা দিচ্ছে। কিন্তু এতে করে পরিবেশ ও জমির কি পরিমাণ ক্ষতি হচ্ছে সেটা বুঝতে পারছে না তারা। তবে কৃষকরা যেন তামাকের বদলে অধিক মুনাফার ফসল ভুট্টা আবাদের দিকে ঝুকে সেজন্য সরকারিভাবে আমরা চেষ্টা করছি।