মোঃ হারুন অর রশিদ:মানিকগঞ্জ সিংগাইর থানার বায়রা ইউনিয়নের সানাইল চকে চলতি মৌসুমে প্রায় ৫৫ বিঘা জমির ধান নষ্ট হওয়ার অভিযোগ দায়ের করেছে স্থানীয় কৃষকগণ । গতকাল ০৬/০৫/২০২৪ইং অভিযোগের ভিত্তিতে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পাশে অবস্থিত মোঃ সালাউদ্দিন রনির ইটের ভাটা । যার আগুনের ধোঁয়ায় পার্শ্ববর্তী সকল ধান ক্ষেতের প্রচুর ক্ষতি দৃশ্যমান । অনেক স্থানে ধানের চারা মরে গেছে এবং যেগুলোর ধানের থোকা বের হয়েছে, তার অধিকাংশই নষ্ট হয়ে গেছে ।
সানাইল চকে ৭টি মেশিনের প্রজেক্টে প্রায় ৫৫ বিঘা ধানের জমিতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়ায় স্থানীয় কৃষক মোহাম্মদ জুনাব আলী বলেন, ” আমার প্রজেক্টের অধিকাংশই ধান ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে । ইটের ভাটার কারণে প্রতিবছর ক্ষয়ক্ষতি হলেও এবারের ক্ষতির পরিমাণ জঘন্যতম । ধানের চারার যে অবস্থা তা গরুতেও খাবে না ।কৃষির উপর নির্ভরশীল আমি । জমিতে অনেক টাকা খরচ করেছি এবং অনেক তেলও খরচ করেছি । আমি আমার ক্ষতিপূরণ দাবি করছি । সরকারের নিকট আমাদের দাবি, ‘ আমরা কৃষক এবং নিরীহ নাগরিক , সঠিক বিচার করে আমাদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হোক’ ।”
সেচ প্রজেক্ট তালিকায় যাদের নাম আছে তারা হলেন, ১ আবেদ আলী, ২ মুগুর আলী, ৩ আলী আজম, ৪ আব্দুল লতিফ, ৫ জয়নাল, ৬ আবু তাহের ৭ জুনাব আলী । এছাড়া ৩৪ জন কৃষক গণস্বাক্ষর দিয়ে জামালপুর ব্লগ উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ আহসান হাবিবের নিকট অভিযোগ দায়ের করেন ।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ আহসান হাবিব কে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি বলেন, “আমি অভিযোগ পাওয়ার পর সরজমিন প্রত্যক্ষ করেছি । প্রায় ৮০% ধান ক্ষেতের ক্ষতিসাধন হয়েছে । আমি আমার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিষয়টি অবহিত করেছি । ইট ভাটার মালিক মোঃ সালাউদ্দিন রনি কে জিজ্ঞাসাবাদ করে করেছি । তিনি তা স্বীকার করেছেন । আমি কৃষকদের পাশে থেকে সর্বাত্মক চেষ্টা করে তাদের সহযোগিতা করব ইনশাল্লাহ ।”
রনি কোম্পানির ম্যানেজার মোঃ আনিসুর রহমানকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি তা স্বীকার করেন এবং আশ্বাস দেন ।
তিনি বলেন ইতিপূর্বে আমাদের ভাটার কারণে ক্ষতি হয়েছিল । সেখানেও আমরা ক্ষতিপূরণ দিয়েছিলাম । আমরা কৃষকদের বন্ধু হিসেবে মনে করি, কৃষকদের ক্ষতি হয়ে থাকলে অবশ্যই তা আমরা দিতে বাধ্য থাকব । “
এ বিষয়ে ইট ভাটার মালিক সালাউদ্দিন রনি (৪২) এর সাথে কথা বললে তিনি বলেন, “ইতিপূর্বেও আমরা ক্ষতিপূরণ দিয়েছি । কৃষকদের যদি ক্ষতি হয়ে থাকে তাহলে, অবশ্যই তা আমরা পূরণ করব । তবে প্রজেক্ট এর মধ্যেও আমারও বেশ কিছু জমি আছে । আমার প্রায় ৫০ বিঘা জমি সেখানে বিদ্যমান । আমি কৃষকদের বর্গা হিসেবে চাষাবাদের জন্য দিয়েছি । যদি আমার ভাটার কারণে তাদের ক্ষতি হয়ে থাকে তাহলে, অবশ্যই কম্প্রোমাইজ করব ।