★আরমান হোসেন খান,জেলা প্রতিনিধি,ঢাকাঃ
‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড কেয়ার’আশ্রমের চেয়ারম্যান মিল্টন সমাদ্দারকে গ্রেফতার করেছে ডিবি পুলিশ। বুধবার(১মে) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ডিবি পুলিশের একটি দল মিরপুর এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে। ডিবি পুলিশের প্রধান হারুন অর রশিদ জানান,মিল্টনকে সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং তিনি বর্তমানে আমাদের হেফাজতে আছেন। এ বিষয়ে বিস্তারিত পরে জানানো হবে।
মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে-তিনি ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার’নামের বৃদ্ধাশ্রম গড়ে রাস্তা থেকে অসুস্থ কিংবা ভবঘুরেদের কুড়িয়ে তার আশ্রমে আশ্রয় দেন। সেসব নারী, পুরুষ, শিশুদের নিয়ে ভিডিও তৈরি করে প্রায়ই তাকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করতে দেখা যায়। মানুষের অসহায়ত্ব তুলে ধরে তাদের জন্য বিত্তবানদের কাছে সাহায্য চান।
তার আবেদনে সাড়া দিয়ে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের ১৬টির বেশি নম্বর এবং ৩টি ব্যাংক হিসাবে প্রতিমাসে প্রায় কোটি টাকা জমা হয়। এছাড়া অনেকেই সরাসরি তার প্রতিষ্ঠানে অনুদান দেন। মানবিক কাজে বিশেষ অবদান রাখার জন্য এপর্যন্ত তিনটি রাস্ট্রীয় পুরষ্কারও পেয়েছেন মিল্টন সমাদ্দার।
কিন্তু মানবিকতার আড়ালে ভয়াবহ প্রতারণার জাল বিস্তার করেছেন মিল্টন সমাদ্দার। প্রকৃতপক্ষে তিনি যে কয়জনকে লালনপালন করছেন,প্রচার করছেন তার চেয়ে কয়েক গুণ বেশি। লাশ দাফন করার যে হিসেব তিনি দিয়েছেন, তাতেও আছে বিরাট গরমিল। সবচেয়ে ভয়ংকর বিষয়, মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে রয়েছে অসহায় মানুষকে আশ্রয় দেওয়ার নামে সেইসব মানুষের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিক্রির অভিযোগ।
গণমাধ্যমের বিভিন্ন প্রতিবেদনে মানবসেবার আড়ালে যে নির্মম ও বর্বরোচিত চিত্র ফুটে উঠেছে তা অত্যন্ত ভয়াবহ। মানব সেবার নামে অসুস্থ,অসহায় ও নিরীহ মানুষকে তুলে এনে চিকিৎসার নামে অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিক্রির যে অভিযোগ মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে উঠেছে তা অত্যন্ত ভীতিকর,ন্যাক্কারজনক ও মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। গুরুতর অসুস্থদের হাসপাতালে না নিয়ে নিজ প্রতিষ্ঠানে আটকে রাখা,ভুয়া ডাক্তার কর্তৃক মৃত্যুর সার্টিফিকেট তৈরি করা কিংবা মৃত লাশের শরীরে কাটাছেঁড়ার সে তথ্য প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।