আরমান হোসেন খান,
উপজেলা প্রতিনিধি,ধামরাই (ঢাকা):জমির মালিকের লোভ, মাটি ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম, রাজনৈতিক অভিভাবকদের উদাসীনতা, প্রশাসনের অপ্রতুলতায় ধামরাইয়ে কৃষি জমি পরিণত হচ্ছে পুকুরে আর ইটভাটার ধোঁয়া দূষিত করছে বায়ুমন্ডল।
মাটিবাহী ট্রাকের বেপরোয়া চলাচলে অহরহ ঘটছে দুর্ঘটনা – হচ্ছে জানমালের ক্ষয়ক্ষতি। শুক্রবার (১৯ জানুয়ারি) ভোররাতে কুশুরা ইউনিয়নের কুশুরা বাজারে মাটিবাহী ড্রাম ট্রাকের ধাক্কায় বিদ্যুতের খুটি দ্বিখণ্ডিত হয়ে সকল তারবাহী সেবা বন্ধ হয়ে যায় এবং একাধিক দোকান ক্ষতিগ্রস্হ হয়।
ঢাকার ধামরাইয়ে নিয়ম – নীতির তোয়াক্কা না করে খননযন্ত্র ( এক্সকেভেটর ) দিয়ে ফসলি জমির মাটি কেটে ইটভাটায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। জমির উপরের অংশ অর্থাৎ টপ সয়েল ইটভাটায় যাওয়ায় জমির উর্বরতা হারাচ্ছে। এতে করে খাদ্য ঘাটতির আশঙ্কা করছে কৃষি বিভাগ। দ্রুত ইটভাটার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ না নিলে আগামীতে খাদ্য ঘাটতি সহ ফসলি জমি হুমকির মুখে পড়বে বলে আশঙ্কা করছে এলাকাবাসী।
ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্হাপন নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৩ বলছে- আবাসিক এলাকা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাট-বাজার ও ফসলি জমির এক কিলোমিটারের মধ্যে ইটভাটা স্হাপন করা যাবে না। এ ছাড়া কোনো সড়ক ও মহাসড়ক থেকে অর্ধ কিলোমিটার দূরত্বে ইটভাটা স্হাপন করতে হবে। কিন্তু ধামরাইয়ের প্রায় সব ইটভাটা আবাসিক এলাকায় গড়ে উঠেছে। প্রশাসন এই ভাটাগুলোকে কিভাবে ছাড়পত্র দেয় – এই প্রশ্ন তুলছে ধামরাইবাসী।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার ১৬ টি ইউনিয়নের শতাধিক জায়গার মাটি কেটে ইটভাটায় নেওয়া হচ্ছে। রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে চলছে এই মাটির ব্যবসা। পাশের জমির মাটি কেটে ফেলায় ভেঙে যাচ্ছে অন্য জমি। এতে বাধ্য হয়ে অন্যরা মাটি বিক্রি করছে। প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেও এর সুরাহা মিলছে না। ফসলি জমি পুকুরে পরিনত হচ্ছে। কৃষকের আহাজারিতে ভারি হচ্ছে ধামরাইয়ের বাতাস।
সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে, ধামরাইয়ের পরিবেশ বাঁচাতে হলে নিজেদের এগিয়ে আসতে হবে। অনলাইনে এবং অফলাইনে যে যেখান থেকে পারেন এই ব্যবসায়ীদের রুখতে নিজেকে একটু হলেও কাজে লাগান। পরিবেশ বাঁচাতে আওয়াজ তুলুন যাতে আপনার আওয়াজে প্রশাসন কঠোর ভূমিকা পালন করে।