আরমান হোসেন খান,ঢাকাঃপ্রকৃতির অপরুপ সৌন্দর্য অবলোকনের জন্য যারা ছুটে যেতে চান ঘরের বাইরে – তাদের জন্য রয়েছে অসাধারণ এক জায়গা ঢাকার খুব কাছাকাছি।
অতি সহজে ও অনায়াসে আপনি বেড়াতে যেতে পারেন ঈশা খাঁর স্বপ্নের নগরী – সোনারগাঁয়ে। এখানে অনেক কিছু দেখার আছে, যা যে কাউকে আকর্ষণ করবে। শুধু ভ্রমণ নয়, এর সাথে সাথে আয়োজন করতে পারেন বনভোজনেরও।
ঢাকা থেকে মাত্র ২৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলায় অবস্থিত এক অসাধারণ জাদুঘর। ইতিহাস থেকে জানা যায়, ১৯৭৫ সালের ১২ মার্চ শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন (সোনারগাঁ জাদুঘর) প্রতিষ্ঠা করেন।
প্রথমে এটি ঐতিহাসিক পানামা নগরীর একটি পুরানো বাড়িতে প্রতিষ্ঠিত হয়। পরে ১৯৮১ সালে ১৫০ বিঘা আয়তনের কমপ্লেক্সে এ দেশের সাধারণ মানুষের শৈল্পিক কর্মকাণ্ডের পরিচয়কে তুলে ধরতে শিল্পী জয়নুল আবেদীন এই জাদুঘর গড়ে তোলেন। জাদুঘরে ঢুকতেই ১০০ বছরের প্রাচীন এক অট্টালিকা ভবন সামনে পড়বে।
এটি পুরোনো বড় সর্দার বাড়ি নামে পরিচিত। এর বাইরে দাঁড়িয়ে আছে প্রাচীন স্থাপত্য ভাস্কর্য দুটি ঘোড়া।
জাদুঘরে আরও আছে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীনের তৈরি গরুর গাড়ির ভাস্কর্য, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য, ও শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীনের ভাস্কর্য।
সর্দার বাড়িতে মোট ১০ টি গ্যালারি আছে। গ্যালারিগুলোতে আছে – কাঠ খোদাই, কারুশিল্প, পটচিত্র ও মুখোশ, আদিবাসী জীবন ভিত্তিক নিদর্শন, গ্রামীণ লোক জীবনের পরিবেশ, লোকজ বাদ্যযন্ত্র ও পোড়ামাটির নিদর্শন।
এছাড়াও তামা-কাসা-পিতলের নিদর্শন, লোহার তৈরি নিদর্শন, লোকজ অলঙ্কার সহ আছে অনেক কিছু। ভবনটির সামান্য পূর্বে আছে লোকজ স্থাপত্যকলায় প্রতিষ্ঠিত জয়নুল আবেদীন স্মৃতি জাদুঘর।
গ্যালারির বাইরে আছে পাঠাগার, ডকুমেন্টেশন সেন্টার, সেমিনার হল, ক্যান্টিন। আরও আছে কারু মঞ্চ, গ্রামীণ উদ্যান ও বিভিন্ন ধরনের বৃক্ষ, মনোরম লেক, লেকের মাঝে ঘুরে বেড়ানোর জন্য নৌ বিহার, মৎস্য শিকারের সুন্দর ব্যবস্হা ও পঙ্খীরাজ নৌকা।
জাদুঘরের মধ্যে কারুশিল্প গ্রামও দেখতে পাবেন। সেখানে লোকজ স্থাপত্যে তৈরি হওয়া মনোরম ঘরগুলো দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষের অজানা -অচেনা।ছুটির দিনে বেড়ানোর জন্য উপযুক্ত স্থান এই জাদুঘর।