মোঃ রেজাউল করিম,ময়মনসিংহ: রমজানে পণ্য মূল্য কমাতে সবজি, মাছ-মাংস ও মসলা পণ্যসহ মোট ২৯ পণ্যের মূল্য বেঁধে দিয়েছে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর।
শনিবার থেকে কার্যকর হওয়ার কথা। কিন্তু সরোজমিনে তদারকির অভাবে তা অকার্যকর হচ্ছে ।পরিস্থিতি এমন-সরকারের এই নির্দেশ এক প্রকার কাগজে-কলমে। ফলে মূল্য নির্ধারণ করার পরও ক্রেতার কোন লাভ হয়নি। বরং অসাধু ব্যবসায়ীরা সরকারকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বাড়তি দরেই পণ্য বিক্রি করছে। ফলে হতাশ সাধারণ ক্রেতাসহ ভুক্তভোগী সাধারণ জনগণ।
কৃষি বিপণন অধিদপ্তর সূত্র মতে, কৃষি বিপণন আইন ২০১৮ এর ৪ (ঝ) ধারার ক্ষমতা বলে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর কৃষি পণ্যের যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণ করেছে। তা পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত নির্ধারিত দামে ক্রয়-বিক্রয় করতে করতে বলা হয়েছে। আর বেঁধে দেওয়া দাম অনুযায়ী পণ্য বিক্রি নিশ্চিত করতে কাজ করবে সরকারের বিভিন্ন সংস্থাগুলো। তবে বাজারে চিত্র পুরোটাই উল্টো।
শনিবার প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি ভোক্তা পর্যায়ে ১৭৫ ও সোনালি মুরগি ২৬২ টাকায় বিক্রির কথা ছিল। কিন্তু খুচরা বাজারে প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২১০-২২০ টাকা। পাশাপাশি প্রতিকেজি সোনালি মুরগি ৩৩০-৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতিকেজি মুগডাল ১৬৫ টাকায় বিক্রির কথা থাকলেও বাজারে পণ্যটি বিক্রি হচ্ছে ১৭০ টাকা। খুচরা বাজারে প্রতিকেজি ছোলার দাম ৯৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে বিক্রি হচ্ছে বিক্রি হচ্ছে ১০৫-১১০ টাকা।
পাশাপাশি প্রতিকেজি মসুর ডালের দাম খুচরা পর্যায়ে ১৩০ টাকা ৫০ পয়সা নির্ধারণ করলেও বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা। মোটা দানার মশুর ডালের কেজি ১০৫ টাকা ৫০ পয়সায় নির্ধারণ করলেও খুচরা বাজারে ১১০-১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
প্রতি কেজি গরুর মাংসের দাম সর্বোচ্চ ৬৬৪ টাকা নিধারণ করেছে সরকার। তবে বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৭৫০-৮০০টাকা। ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৭৫ টাকা ও সোনালি মুরগি ২৬২ টাকা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু রাজধানীসহ সারাদেশে খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ২২০ ও সোনালি ৩৫০ টাকা।
প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৬৫ টাকা, কিন্তু বাজারে ক্রেতার ১০০-১২০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। প্রতিকেজি রসুন ১২০ টাকা ও আদা ১৮০ টাকা দরে বিক্রি করার কথা। তবে বাজারে এই দামে পণ্য দুটি মিলছে না। বিক্রি হচ্ছে ১৫০-২০০ এবং ১৮০-২২০ টাকা।
বাজারে পণ্য কিনতে আসা বগুড়ার মোঃ হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, শুধু পত্রিকা ও টেলিভিশনে দেশি সরকার পণ্যের দাম কমেছে বা বেঁধে দিয়েছে। কিন্তু বাজারে কখনো মিল পাওয়া যায়নি। যা বর্তমান বাজার মূল্যে আমাদের মতো সাধারণ মানুষের চলা কষ্টসাধ্য ব্যাপার। যা অন্যান্য দেশের চেয়ে বাংলাদেশে দ্রব্যমূল্য কয়েক গুণ বেড়ে যায় বলে তিনি তার কষ্টের জায়গা থেকে সব মন্তব্য করেন।
মনে হয় সরকারের সংস্থাগুলো পণ্যের দাম বেঁধে দিয়ে তারা তাদের দায়িত্ব শেষ করে। কিন্তু বাজারে তদারকি করে না। সেক্ষেত্রে ভোক্তার কোন লাভ হয় না। সব লোক দেখানো মাত্র।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান “দৈনিক ক্রাইম তালাশ কে” বলেন,পণ্যের দাম বেঁধে দিলেই হবে না। পণ্য সেই দামে বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে কি না তা যাচাই করতে হবে। ক্রেতা বেঁধে দেওয়া দামে পণ্য কিনতে পারছে কি না তা তদারকি করতে হবে। যদি সেই দামে বিক্রেতারা পণ্য বিক্রি না করে, তাহলে তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে। সংশি্লষ্ট সংস্থার কাছে জবাব দিহিতা করতে হবে। তা না হয় বরাবরের মতো কাগজে-কলবে বেঁধে দেওয়া দাম শুধুয় থাকবে।আর বাস্তবে ভোক্তাদের পকেট কাটবে।
কৃষি বিপণন অধিদপ্তর সূত্র জানায়, পণ্যের দাম বেঁধে দেওয়ার পর সেই দামে বিক্রি হচ্ছে কি না সেটা তদারকি করছে। সঙ্গে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পাশাপাশি সরকারের একাধিক বাজার এই বেঁধে দেওয়া দাম পর্যবেক্ষন করছে। কিন্তু অনেক খুচরা ব্যবসায়ীদের পণ্য বেশি দামে কেনা, তাই বেশি দামেই বিক্রি করছে। তবে দুই এক দিনের মধ্যে দাম সহনীয় হবে। বেঁধে দেওয়া দামে পণ্য বিক্রি হবে বলে তারা জানান।
২৯টি পণ্যের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। এই পণ্য বাজারে নির্ধারিত দামে বিক্রি হচ্ছে কি না সেটা দেখা হচ্চে। অনিয়ম পেলে আইনের আওতায় আনা হবে,বলে কর্তৃপক্ষ এমনটাই জানিয়েছেন।
তবে কাঁচ বাজার অনুসন্ধান করে দেখাগিয়েছে যে,
গত রমজান থেকে এই রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় সহ প্রত্যেকটি জিনিসের ৩০-৫০% বিশেষ করে কাঁচা বাজারে দাম বেড়েছে।