এসএম নুরুল আমিন,কুড়িগ্রাম সংবাদদাতা: কুড়িগ্রাম জেলার ভূরুঙ্গামারী উপজেলার দুধকুমর নদে জেগে ওঠেছে বিস্তীর্ণ চরাঞ্চল ।
এসব চরাঞ্চলে বিভিন্ন ফসলের আবাদ হচ্ছে। এবার অধিকাংশ জমিতে সরিষা চাষ করেছেন কৃষকগন ।
সমগ্র উপজেলার পাশাপাশি সরিষার হলুদ ফুলে নব বধুর সাজ সেজেছে দুধকুমর নদের চর।
হেমন্তের সকালে হালকা কুয়াশার চাঁদরে মোড়ানো সোনালী মিষ্টি রোদের উষ্ণতায় মৌমাছিরা মধু আহরনে ব্যাস্ত হয়ে গুনগুন সুর তুলেছে সরিষা ক্ষেতে।
গোটা উপজেলার পাশাপাশি চরাঞ্চলে এবার সরিষার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানাযায়, চলতি মৌসুমে উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে ০৩ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। সেই লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে।
কৃষক,বারী ১৪, ১৭, ১৮ ও বীনা ০৮, ০৯, ১১ জাতের সরিষা চাষ করেছেন।
চরাঞ্চলের কৃষকরা জানান, বন্যায় ও ভাঙ্গনের স্রোতে জমা পড়া পলিমাটিতে উর্বর আবাদি জমিতে পরিপূর্ণ ভাবে পরিণত হয়েছে দুধকুমর নদের বুকে জেগে ওঠা চর।
সেখানে বিভিন্ন ফসল ফলিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে চাইছেন স্থানীয় নদীভাঙ্গা মানুষ গুলো।
এবারও নিজের বুকটাকে যেন উজাড় করে দিয়েছে দুধকুমর নদীর চর। সরিষা সহ শীত কালিন বিভিন্ন সবজি চাষ করে পরিবারে চাহিদা মিটিয়ে বাজারে বিক্রি করে বাড়তি আয় করছেন তারা।
সরেজমিনে উপজেলার পাইকেরছড়া, পাইকডাঙ্গা, চর ভুরুঙ্গামারীর কিছু অংশ , চর উত্তর তিলাই, দক্ষিন ছাট গোপালপুরের বইজার চর, চর বারুইটারী ও চর বলদিয়ার দুধকুমার নদীর তীরবর্তী এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, যতদূর চোখ যায় কেবলই হলুদ আর সবুজের সমারোহ।
শত শত হেক্টর জমিতে সরিষার পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের ফসল ফলানো হয়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিস বলছে, সরিষা চাষ খুবই লাভজনক একটা আবাদ। অতি অল্প সময়ে, অল্প পুঁজিতে কৃষকরা লাভবান হন। তাই অধিকাংশ কৃষক এখন সরিষা চাষের দিকে ঝুঁকছেন। আমন ও বোরো এই দুটি ফসলের মাঝে কৃষকরা সরিষার ফলনকে বোনাস আবাদ হিসেবে দেখছেন।
সরিষা চাষের ৭৫ থেকে ৮০ দিনের মধ্যে ফলন ঘরে তোলা যায়।
নদী তীরবর্তী চর এলাকার বাসিন্দা রহিম, সাজেদুল, মজিদ, জব্বার , রফিকুল ও শাহাজাহান জানান, আমরা দুধকুমার নদীর জেগে ওঠা চরে সরিষা চাষ করেছি । আশা করছি খুব ভালো ফলন হবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল জব্বার বলেন, সরিষা মূলত একটি মসলা জাতীয় ফসল।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মোতাবেক তেল উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে কৃষি প্রণোদনায় সার ও বীজ সঠিক সময়ে কৃষকদের কাছে পৌছে দেয়া হয়েছে।
উপজেলায় এবার সরিষার বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
কৃষক তাদের পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে বাড়তি ফসল বিক্রি করে অধিক মুনাফা অর্জন করতে পারবেন।