লিটন সরকার,রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি:
কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলায় ঢাকা মহাসড়ক হতে উপজেলার নটান পাড়া হয়ে বড়াইবাড়ি সীমান্ত চুলিয়ারচর রাস্তায় হাসপাতাল সংলগ্ন বিজিবি ক্যাম্পের পূর্ব পাশে কুড়ার উপর ১৬৮ মিটার চেইনেজে ৩৬.০৬ দীর্ঘ আরসিসি গার্ডার ব্রিজ নির্মাণ কাজের নির্ধারিত মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও শেষ হয়নি কাজ। দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও ব্রিজের কাজ সম্পন্ন করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এদিকে, যথাসময়ে ব্রিজের নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়ায় চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন হাজার হাজার সাধারন মানুষ।
যাতায়াতের উন্নয়নে সরকারের কোটি কোটি টাকা ব্যয় হলেও সংশিষ্টদের উদাসীনতায় সমালোচনায় ফেলছে সরকারের উন্নয়ন। উপজেলার হাসপাতাল সংলগ্ন বিজিবি ক্যাম্পের পূর্ব পাশে কুড়ার উপর ব্রিজ নির্মাণ কাজের ধীরগতির কারণে উপজেলার রৌমারীতে হতে চুলিয়ারচর পর্যন্ত প্রায় ২২ টি গ্রামের ৪০ হাজার মানুষের উপজেলা শহরের সাথে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এতে এলাকার শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী, চাকরি জীবিসহ সাধারণ মানুষকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
মঙ্গলবার ( ০৪ জুন ) সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, দীর্ঘদিন যাবত নির্মাণ কাজ অবহেলায় পড়ে থাকার কারণে এলাকার মানুষের বর্তমানে চরম ভোগান্তি। অভিযোগ উঠে ডাইভেরশন ব্রিজটি নিম্নমানের হওয়ায় দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন কমল মতি স্কুলগামী শিক্ষার্থীসহ সাধারন মানুষ। এলজিইডির বাস্তবায়নে প্রোগ্রাম ফর সাপোর্টিং রুরাল ব্রিজ ৪ কোটি ৬৪ লাখ ৪ শত ৭৭ টাকায় টেন্ডার হয়। ব্রিজটি ভেঙ্গে নতুন ব্রিজ নির্মাণে ঠিকাদারের অবহেলায় চুলিয়ারচর, কলাবাড়ি, বারবান্দা, নামা বারবান্দা, সাত ইজলামারী, গোয়াল গ্রাম, ফুলবাড়ি, ভুন্দুরচর, সাত ইছাকুড়ি, নটান পাড়াসহ উপজেলা শহরে আসতে প্রায় ২২ গ্রামের প্রায় ৪০ হাজার মানুষের চলাচলে চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন প্রতিনিয়ত। তবে স্থানীয় জনগণের ভাষ্য মতে, এই ব্রিজটি একটা জনগুরুত্বপূর্ণ অথচ ঠিকাদারের অবহেলায় কাজের ধীরগতি হওয়ায় প্রতিনিয়ত ভোগান্তি পোহাচ্ছে সাধারন মানুষ।
উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, রৌমারী হাসপাতাল ও বিজিবি ক্যাম্প সংলগ্ন পূর্ব পার্শ্বে কুড়ার উপর ব্রিজ নির্মাণে এলজিইডির ৪ কোটি ৬৪ লাখ টাকা বরাদ্দে মের্সাস দুর্গা এন্টারপ্রাইজ শ্যামল বাবু টেন্ডারের মাধ্যমে কাজটি পায়। পরে রৌমারী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমানের রবিনের কাছে সাব-ঠিকাদার হিসাবে কাজটি বিক্রি করে দেন। পরে তার কাছ থেকে ব্রিজের কাজেল সকল দায়িত্ব ভার বুঝে নিয়ে বর্তমান কাজ করছেন রাশেদুল ইসলাম নামের একব্যাক্তি। সাব-ঠিকাদার গত বছর মে ও জুন মাসে ব্রিজটি ভেঙ্গে দিয়ে নতুন করে ব্রিজ নির্মাণের পদক্ষেপ নিলেও বিভিন্ন অজু হাতে বর্তমানে ব্রিজ নির্মাণের কাজ ধীরগতিতে চলছে।
সূত্রে আরও জানা যায়, এলজিইডির বরাদ্দে ৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ডাইভেরশন ব্রিজ নির্মাণ করে দেয়ার কথা থাকলেও তা না দিয়ে হালকাভাবে কাঠের ব্রিজ নির্মাণ করেন। অপরদিকে দায় এড়াতে নড়বড়ে কাঠের সাঁকো নির্মাণ করে দেন ঠিকাদার। বর্তমানে কোনো উপায় না পেয়ে ঠিকাদারের নির্মিত নড়বড়ে কাঠের সাঁকো দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছেন স্কুল কলেজ শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ীসহ সাধারণ মানুষ। এদিকে ডাইভেরশন ব্রিজের হাজার হাজার জোড়ার তালির ব্রিজ দিয়ে পাড়া পাড় হতে সাধারন মানুষ ভয় পাচ্ছে।
এ বিষয়ে রৌমারী সদর ইউনিয়ন ইউপি সদস্য শহিদুল ইসলাম জানান, ব্রিজের জোর জার ভাবে কোনো কাজইে হচ্ছে না। এভাবে চলতে থাকলে বহুত সময় লাগবে। এদিকে কাঠের ব্রিজ দিয়ে পাড় হতে ভয় লাগে বড় বড় তারকাটা বেড় হয়ে আছে। যেকোনো সময় মানুষ দূর্ঘটনায় শিকার হতে পারে। আমি সরকারের দৃষ্টি কামনা করছি জনসাধারণের দুর্ভোগ লাঘবে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হউক।
স্থানীয় বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা আজিবর রহমান অভিযোগ করে বলেন, এই ব্রিজের কাজের কোনো গতি নাই। রৌমারী বাজারে যাইতে একমাত্র ভরসা ছিলো ব্রিজটি। কাঠের একটা ব্রিজ নির্মান করেছে তার উপর দিয়ে পাড় হতে গা কাপে।
রৌমারী সদর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক জানান,সাধারন মানুষের পক্ষ থেকে দাবি করছি দুর্ভোগ লাঘবে দ্রুত ব্রিজের কাজ সম্পন্ন করা হউক।
সাব ঠিকাদার রাশেদুল ইসলাম এর সাথে কথা হলে বলেন, নানা সমস্যার কারনে কাজের সমস্যা হয়েছে তবে কাজ চলমান রয়েছে।
তবে ঠিকাদার শ্যামল বাবুর সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।
উপজেলা প্রকৌশলী মুনসুর জানান, এই কাজ গুলো জেলা থেকে মনিটরিং করা হয় আমরা সহযোগীতা করি মাত্র। বিস্তারিত জানার জন্য জেলা নির্বাহী স্যাারের সাথে যোগাযোগ করুন।
এব্যাপারে নির্বাহী প্রকৌশলী কুড়িগ্রাম মাসুদুজ্জামানের ব্যবহিত মোবাইল ফোনে একাধীকবার কথা বলার চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি।