![](https://crimetalash.com/wp-content/plugins/print-bangla-news/assest/img/print-news.png)
মো:সাদেকুল ইসলাম,লালমনিরহাট জেলা প্রতিনিধি:ছাবেরা খাতুন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাধব চন্দ্র সাহা বলেন, বিদ্যালয়ের মৌলভী শিক্ষক ওমর আলী নিকাহ রেজিস্টার কাজের জন্য বিদ্যালয় থেকে কোন ধরনের অনুমতি গ্রহন করেন নি। আর আমার বিদ্যালয়ের নাবালিকা শিক্ষার্থীর বিয়ের ঘটনাটি গনমাধ্যমে জেনেছি।
বিদ্যালয়টির পরিচালনা কমিটির সভাপতি সিরাজুল হক বলেন, আমরা বাল্যবিয়েকে লাল কার্ড দেখাতে প্রায় সমাবেশ করে থাকি। সেখানে বাল্যবিয়ের কুফল নিয়ে বক্তব্য রাখেন মৌলভী শিক্ষক কাজী ওমর আলী। তিনি যদি বাল্যবিয়ে রেজিস্ট্রি করেন তবে তা দুঃখজনক। আমরা প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা নিব।
হাতীবান্ধা উপজেলার টংভাঙ্গা ইউনিয়নের নিকাহ রেজিস্টার কাজী গোলাম মোস্তফা বলেন, চলতি সপ্তাহে নিজ ইউনিয়নের পশ্চিম বেজগ্রামে একটি বিয়ে রেজিস্ট্রি করতে গিয়ে দেখি গেন্দুকুড়ি কলেজের অধ্যক্ষ হারুন আর রশিদ বিবাহ রেজিস্ট্রি করাচ্ছেন। পরে তাকে ভলিয়ম বহি সহ আটক করলেও স্থানীয়দের অনুরোধে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। এমন ভুয়া নিকাহ রেজিস্টাররা বাল্যবিয়ে ও ভুয়া বিচ্ছেদের অপকর্ম করে আসছে। এদের দৌড়াত্ব রোধে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
এদিকে বাল্যবিয়ে ঠিকাতে গিয়ে কমলাবাড়ি ইউনিয়ন নিকাহ রেজিস্টারের সহকারী রফিকুল ইসলামের হামলার শিকার হয়েছেন কালীগঞ্জ উপজেলার চলবলা ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি সাইফুল ইসলাম। প্রতিকার চেয়ে গত ৫ ফেব্রুয়ারী জেলা রেজিস্টার বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন আওয়ামীলীগ নেতা। মুলত কতিপয় নিকাহ রেজিস্টারের কারনে বাল্যবিয়ে মুক্ত জেলা লালমনিরহাটে উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে বাল্যবিয়ে। একই কারনে ভুয়া বিবাহ আর বিবাহ বিচ্ছেদও ঘটছে উদ্বেগজনক হারে।
জেলার প্রায় ২৫/৩০ জন নিকাহ রেজিস্টার দ্বৈত পেশায় নিয়োজিত রয়েছেন। যার বেশির ভাগই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। ফলে তারা নিজেরা নিকাহ রেজিস্টার নিয়োগ নিয়ে অপর একাধিক সহকারীর মাধ্যমে বিবাহ রেজিস্ট্রি করছেন। এসব সহকারী নামের ভুয়া নিকাহ রেজিস্টারের কারনে লালমনিরহাটে বাড়ছে বাল্যবিয়ে। যার কবলে পড়ে বিয়ের নকলের অভাবে অনেক কিশোরী তার ন্যায্য অধিকার বঞ্চিত হচ্ছেন।
বাল্যবিয়ে রোধে নিকাহ রেজিস্টারদের সহকারী রাখার নামে ভুয়া রেজিস্টারের দৌড়াত্ব কমাতে হবে। একই সাথে নিজ অধিক্ষেত্রে নিকাহ রেজিস্টারদের দায়িত্ব পালন এবং বিবাহ নিবন্ধন ডিজিটাল করার জোর দাবি সচেতন মহলের।
জেলা রেজিস্টার খালিদ বিন আসাদ বলেন, বাল্যবিয়ে রোধে প্রায় সমাবেশ করা হচ্ছে। নিকাহ রেজিস্টারদের অধিক্ষেত্রের বাহিরে এবং সহকারী রাখার কোন নিয়ম নেই। মেয়ের ১৮ এবং ছেলের ২১ বছরের আগে বিয়ে আইনত অপরাধ। বাল্যবিয়ের সুনির্দিষ্ট তথ্য উপাত্তসহ অভিযোগ পেলে সংশ্লিষ্ট নিকাহ রেজিস্টারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। গোপন ভলিয়মে বাল্যবিয়ে ও ভুয়া বিচ্ছেদ ঠেকাতে বিবাহ নিবন্ধন ডিজিটাল করার প্রস্তাব করেন তিনি। যেখানে বিবাহ এবং বিচ্ছেদের তথ্য অনলাইনে থাকবে। যা তাৎক্ষণিক নকলও পাওয়া সম্ভব হবে। এমনটা করা হলে এ সমস্যা থেকে মুক্তি মিলতে পারে বলেও প্রস্তবনা দিয়েছেন তিনি।